bdtnews 24
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
২৩ মে, ২০১৯ ১৭:৫৭:১৮
কুড়িগ্রামে পুত্রের চেয়ে মাত্র দেড় বছরের বড় পিতা! আশ্চর্যজনক মনে হলেও এমনি অবাস্তব ঘটনা ঘটেছে উলিপুর উপজেলার আবু বকর সিনিয়র মাদ্রাসার পিয়নের নিয়োগের ক্ষেত্রে। বিষয়টি শিক্ষা বিভাগের নজরে নেই দাবী করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস কর্তৃপক্ষের।
অনুসন্ধান ও অভিযোগ সূত্রে জানাযায়,উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নে তবকপুর আবু বকর সিনিয়র মাদ্রাসায় ২০১৬সালে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। এসময় আনোয়ারুল ইসলাম এবং কাবিল উদ্দিন এই ২জন পিয়ন পদে নিয়োগ পান। আনোয়ারুল ইসলাম একই ইউনিয়নের খামার তবকপুর গ্রামের মৃত: উমর আলীর পুত্র। নিয়োগ পাবার পর নভেম্বর মাসেই যোগদান করেন এই দুজন। অভিযোগে জানা যায়, আনোয়ারুল ইসলাম ও কাবলি উদ্দিন এরা দুজনেই মূলত ৫ম শ্রেণী পাশ হলেও নিয়োগে দেখান হয় ৮ম শ্রেণী। এই দুজনের এমপিও হয় ২০১৮ সালের মার্চ মাসে। এমপিও সিটে দেখা যায় ইনডেক্স ২১২১৭৮৫ নম্বরে আনোয়ারুল ইসলাম ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫খ্রি: জন্ম তারিখ দেখানো হয়। তার এনআইডি ১৯৭৮৪৯১৯৪৭৮৬৩৪৩৩৭ নং কার্ডে দেখাযায়, জন্ম ২৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৮ খ্রি:। পিতা-উমর আলী, মাতা- মোছা: শেফালী বেগম। শিক্ষাগত যোগ্যতা ৫ম শ্রেণী। গ্রাম-খামার তবকপুর(০৭৬৩)। ভোটার সিরিয়াল নং- ৫৮৩ এবং ভোটার নং-৪৯০৭৬৩৬৩৪৩৩৭। তিনি চাকরিতে যোগদানের সময় বয়স লুকালেও তার এনআইডতে আসল বয়স লুকায়নি। এচাড়াও তার বড় পুত্র আবু সুফিয়ান ২০১০সালে এসএসসি পাশের সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ রয়েছে ১১ই ডিসেম্বর ১৯৯৬খ্রি:। ভুয়া কাগজপত্রাদিও মাধ্যমে চাকরি নিয়ে নিয়মিত সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন নিয়োগকৃত আনোয়ারুল ইসলাম এবং কাবিল উদ্দিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান,আনোয়ারুল ইসলাম ইনডেক্স ২১২১৭৮৫ নম্বর এবং কাবিল উদ্দিন ২১১৮২৯২ ইনডেক্স নম্বরে নিয়মিত বেতনভাতাদি তুলেছেন। তারা দুজনই ১৬লাখ করে ৩২লাখ টাকায় নিয়োগ নিয়েছেন। এনআইডিতে তারা জন্ম তারিখ ঠিক রেখে সাল পরিবর্তন করেছেও বলে জানান তারা। আনোয়ারুলের ছেলে কারমাইকেল কলেজে মাস্টার্স করছে এবং কাবিল উদ্দিনের বড় ছেলে ডেফোডিল ইউনিভার্সির্টি মাস্টার্স করছে। এমন অনিয়মের বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তারা জানলেও কেউ কোন ব্যবস্থা নেননি।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত আনোয়ারুল ইসলামের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ছোট ছেলে শামীম ফোন ধরে বলে কি বলার আছে আমাকে বলেন। আমার বাবাকে ফোন দিতে পারব না।
এই বিষয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী জানান, এই নিয়োগ গুলো আমার আমলে হয়নি। প্রয়াত অধ্যক্ষ আব্দুল কুদ্দুছ সাহেবের সময়কার। তবে এই বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবকপুর আবু বকর সিনিয়র মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি এ্যাড. মুসা মিয়া বলেন, আমি কিছু জানিনা। যার সমস্যা তার সাথে কথা বলেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুল আলম জানান, ২০১৮সালের বিধি মোতাবেক কেউ ৩৫ বছরের অর্ধে এবং ৬০ হলে চাকরি করার নিয়ম নেই। তবে এমন অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন জানলাম প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দেখে ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।